রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়।


আমাদের শরীরে যখন কোনো জীবাণু  প্রবেশ করে তখন আমাদের শরীর ওই জীবানুকে ধংশ করে দেয়। এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় ইমুউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। 





আমদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সক্রিয় ও বৃদ্ধি করতে আমরা কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পারি। immune boost বা রোগ প্রতিরোধ তন্ত্রের কার্যকরীতা বৃদ্ধির জন্য কিছু উপায় নিম্নে দেওয়া হলোঃ-

##সুষম খাবারঃ

 রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য প্রথম যেটি প্রয়োজন তা হচ্ছে সুষম খাবার।
আপনাকে নিয়মিত সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি ফলমূল - শাক সবজি ক্ষেতে হবে প্রচুর পরিমানে।

প্রোটিনঃ আমাদের রোগ প্রতিরোধ তন্ত্রের প্রধান ১টি উপাদান হলো এন্টিবডি। এই এন্টিবডি হচ্ছে এক ধরনের বিশেষ প্রোটিন।  তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য আমাদের নিয়মিত প্রোটিন জাতীয় খাবার গ্রহন করতে হবে। আপনার শরীররের প্রতি কেজি ওজনের জন্য এক গ্রাম করে প্রোটিন প্রোয়জন। যেমনঃ আপনার ওজন যদি ৬০কেজি হয় তাইলে আপনার প্রতিদিন ৬০গ্রাম প্রোটিন দরকার।
এর জন্য আপনি ডিম, মুরগীর মাংস, ডাল, মাছ খেতে পারেন। তবে লাল মাংস এড়িয়ে চলবেন। কারন লাল মাংস শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

ভিটামিন-সিঃ ভিটামিন -সি একটি ইমিউন বুস্টিং এজেন্ট অর্থাৎ ভিটামিন -সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দিতে খুব কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
আমাদের শরীর ভিটামিন -সি জমা রাখতে পারে না। তাই প্রতিদিন এটি গ্রহণ করতে হয়। এর জন্য আপনি প্রতিদিন আমলকী, লেবু, কমলালেবু, পেয়ারা, জাম্বুরা, আমড়া, পেয়ারা, পেঁপে, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন টক জাতীয় ফল খেতে পারেন।
এইছাড়া সরাসরি ভিটামিন-সি ট্যাবলেট বাজার থেকে কিনে খেতে পারেন।

ভিটামিন- বি১২ঃ এটিও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কার্যকর রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দুধ ও ডিমে প্রচুর ভিটামিন-বি১২ থাকে। তবে এটি ট্যাবলেট আকারেও পাওয়া যায়।

ভিটামিন-ডিঃ ভিটামিন-ডি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।  ভিটামিন-ডি এর প্রাকৃতিক উৎস হচ্ছে সূর্য রশ্মি।  দিনের বেলায় শরীরের নির্দিষ্ট অংশ খোলা রেখে রোদে থাকতে হবে। এতে ত্বকের নিচে ভিটামিন-ডি তৈরি হয়।
এইছাড়া সামুদ্রিক মাছ ও মাছের তেল, ডিমের কুসুম, গরু কলিজা, চিজ ইত্যাদি খেতে পারেন। তবে ভিটামিন-ডি এর জন্য সূর্যের আলোর বিকল্প নাই।

জিংকঃ আনাদের শরীরে শ্বেতরক্তকণিকা রোগ জীবাণু ধংস করে।  শ্বেতরক্তকণিকা উৎপাদনে জিংক মূখ্য ভূমিকা পালন করে। তাই জিংকের অভাব পূরন করতে বাদাম, আদা, রসুন, শিম, দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করতে হবে। শিশু শরীরে জিংকের অভাবে বেশী ঝুকি তৈরি হতে পারে।

মধুঃ মধুর অনেক গুণ। মধুতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি ভাইরাস সহ বিভিন্ন জীবানুর বিরুদ্ধে দারুণ কার্যকরী।

কালোজিরাঃ কালোজিরা একটি এন্টি এক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার। যা রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে বলে প্রমানিত।

##নিয়মিত ব্যায়ামঃ 
নিয়মিত শরীরচর্চা খুব প্রয়োজনীয়।  নিয়মিত হাটা, সাইক্লিং, সাতার কাটা ইত্যাদি ব্যায়াম যেমনি শরীর ফিট রাখে তেমনি মানসিক প্রসান্তিও আনে। যার ফলে ইমিউন তন্ত্র ভালোভাবে কাজ করতে পারে।

## দুঃচিন্তা মুক্ত থাকাঃ
আপনি যখন মানসিক চাপে থাকবেন তখ আপনার শরীরের স্বাভাবিক কাজকে ব্যহত করে। দুঃচিন্তা করলে আপনার  sympathetic কার্যকলাপ বেড়ে যাবে। যার ফলে মস্তিষ্ক নানা ধরনের রাসায়নিক ক্ষরন করতে পদক্ষেপ নিবে।  যেমনঃ কর্টিসল হরমোন  ক্ষরিত হয়। যা আপনার রোগ প্রতিরোধ কার্যকলাপে বাধা দিবে। তাই সব সময় মানসিক চাপ মুক্ত থাকতে হবে।

##ঘুমঃ
রাত জেগে থাকা শরীরের জন্য খুব ক্ষতিকর। প্রতিদিন রাতে আট ঘন্টা ঘুমানো খুব প্রয়োজন। এতে আপনার ইমিউনিটি বুস্ট বা বৃদ্ধি পাবে।

##ওজনঃ
যাদের ওজন বেশি তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম।  তাই সবসময় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে ফলে দেহ নিরোগ থাকবে।

এই বিষয়গুলো মেনে চললে আশা করা যায় আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।   

Post a Comment

1 Comments

  1. যদি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকে, তাহলে আপনি স্বাস্থ্য সমস্যা এড়াতে পারবেন, কিন্তু আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে তা সরাসরি আপনার স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে এবং রোগগুলি সহজেই আপনাকে ঘিরে ফেলতে পারে।
    ৮টি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়

    ReplyDelete